রাসেল হোসেন:
স্বাভাবিকভাবে শুকনো মৌসুমে ঢাকা-বরিশাল নৌপথে নাব্যতা সংকট দেখা দেয়। কিন্তু এবার শুকনো মৌসুম শুরুর আগেই কমে গেছে নদীর পানির স্তর। ঢাকা ও বরিশাল নৌপথের অন্তত দুটি স্থানে ডুবোচরে আটকে যাচ্ছে যাত্রীবাহী লঞ্চ ও পণ্যবাহী জাহাজ ।
বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জের বাগরজা থেকে বামনীর চরের গজারিয়া ও চাঁদপুর থেকে হিজলার মেঘনার মল্লিকপুরে ভাটার সময় পানি তলানিতে যাচ্ছে। ফলে বড় লঞ্চগুলো বাধ্য হয়ে কম গতিতে চলাচল করছে। মাঝরাতে চরে আটকে পড়ার ঘটনাও ঘটছে। স্বাভাবিকভাবে নভেম্বরে শেষ দিকে নাব্যতা সংকট দেখা যেত কিন্তু এবার অক্টোবর মাসেই নাব্যতা সংকট দেখা দিয়েছে।
বরিশাল থেকে ঢাকাগামী লঞ্চ যাত্রী রফিকুল ইসলাম বলেন, “আগে শীতের সময় লঞ্চ ডুবোচরে আটকে যেত এবার দেখছি এখনই ডুবোচরে আটকে যাচ্ছে লঞ্চ।”
মানামী লঞ্চের সুপার ভাইজার বেলাল হোসনে বাপ্পী বলেন, নদীতে পানি কমার কথা শীত মৌসুমে । কিন্তু এখনই পানি কমে গেছে। আগে নভেম্বর মাসে লঞ্চ ডুবো চরে আটকাতো এবার অক্টোবর মাসেই ডুবো চরে লঞ্চে আটকে যাচ্ছে। কয়েকদিন আগে ডুবো চরের সাথে লঞ্চের ধাক্কায় ২৫০ প্লেট ভাঙ্গছে। এছাড়াও লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমরা অতি দ্রুত ড্রেজিং করে নাব্য সংকট দূর করার দাবী জানাই।
নাব্য কমে যাওয়ায় শুধু যাত্রীবাহী লঞ্চ নয়, বরিশাল থেকে ঢাকা,চাঁদপুর ও নারায়ণগঞ্জ রুটের পণ্যবাহী জাহাজগুলোও ধীরে চলতে বাধ্য হচ্ছে। এতে পরিবহন সময় বেড়ে যাচ্ছে এবং খরচও বাড়ছে। নৌযানচালকরা বলছেন, নদীপথে স্বাভাবিক যাতায়াত ফিরিয়ে আনতে এখনই ড্রেজিং জরুরি হয়ে পড়েছে।
বরিশাল বিভাগীয় পরিবেশ ও জনসুরক্ষা ফোরামের আহবায়ক শুভংকর চক্রবর্তী বলেন, শীতের সময় নদীর পানির স্তর কমে যায়। শীত আসার আগেই নাব্যতা সংকট দেখা দিয়েছে। এখনই ব্যবস্থা না নিলে শীতে নাব্যতা সমস্যা প্রকট থেকে প্রকটতর হবে। ঝুঁকিতে পড়ে যাবে ঢাকা-বরিশাল নৌপথ। নাব্যতা সংকট দূর করতে ড্রেজিং করে নদীর মাটি নদীতেই ফেলা। এতে আসলে সাময়িক কিছু সময়ের জন্য নাব্যতা দূর হয়। দরকার মহাপরিকল্পনার মাধ্যমে ড্রেজিং করা। নদীর মাটি অন্য কোথাও ফেলা।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)-এর বরিশাল অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ মামুন উর রশিদ বলেন, ঢাকা-বরিশাল নৌরুটের দুটি যায়গায় নাব্যতা সংকট দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে মেহেন্দীগঞ্জের বাগরজা থেকে বামনীর চরের গজারিয়া পর্যন্ত এক কিলোমিটার পথের নাব্যতা দূর করতে ড্রেজিং এর জন্য টেন্ডার কল করেছি। ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে কাজ শুরু হয়ে যাবে। এ ছাড়া চাঁদপুর থেকে হিজলার মেঘনার মল্লিকপুরের নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে গভীরতার পথ পাল্টে গেছে। আমারা চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএকে অবহিত করেছি তারা বয়া-বিকন বাতি নতুন করে দিবেন।