Take a fresh look at your lifestyle.

প্রাইম দোলেশ্বর ও বিপিএল যেভাবে তৈরি করেছে মালান ‘দালান’

৩১০

নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ হারের পর ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জস বাটলার ব্যাটসম্যানদের বার্তা দিয়েছিলেন, মারার বল পেলে-ই মারতে! শুধু মারার বলই নয়, ভালো বলকেও সমীহ নয়। চেষ্টা করতে হবে সেটাও যেন বাউন্ডারিতে যায়। সারমর্ম দাঁড়ায়, যদি ৩০০ বলে ৩০০ বাউন্ডারির সুযোগ থাকে সেটাই করতে! ডেভিড মালান বলছিলেন, ‘কন্ডিশন আর বল অনুযায়ী ব্যাটিং। সেটা ৩০০ হলে ৩০০, ৪০০ হলে ৪০০।’

 

মালান অধিনায়কের কথা বেশ ভালোভাবেই শুনেছেন। নয়তো মোস্তাফিজকে ইনিংসের শুরুতে মিড উইকেট দিয়ে যেভাবে ছক্কা হাঁকিয়েছেন তা তার চরিত্রের বাইরের কিছু। একবার নয়, মোস্তাফিজকে নতুন বলে ওই সীমানা দিয়ে আরেকটি ছক্কা পেয়েছেন। মিরাজের এক ওভারে দুটি করে চার ও ছক্কা মারতে একটুও কাপর্ণ্য করেননি। ছয় ইনিংস আগেই মিরপুর শের-ই-বাংলায় বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম ও ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন। ধর্মশালায় মঙ্গলবার ষষ্ঠ সেঞ্চুরি পেলেন। ১০৭ বলে সাজিয়েছেন ১৪০ রানের ইনিংস। যেখানে ছিল ১৬ চার ও ৫ ছক্কা। যা তার ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ রানের ইনিংসও।

ইংলিশদের জয়ের নায়ক ম্যাচ শেষে প্রতিক্রিয়ায় বললেন, ‘আমি রীতিমত উড়ছি। ইংল্যান্ডের হয়ে বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি করা অসাধারণ। পাশাপাশি দলকে জেতানো আনন্দের কিছু। আপনি যদি নিজের কাজটা ঠিকঠাক না করেন তাহলে এখানে থাকার মানে নেই। আশা করছি আমি সামনেও একই কাজ করতে থাকব।’

 

বাংলাদেশের বিপক্ষে মালানের ব্যাটিং করা তুলনামূলক সহজ তা কে না জানে? কেননা বাঁহাতি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত মুখ। ২০১৩ সালে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে তাকে প্রথম উড়িয়ে আনে প্রাইম দোলেশ্বর। শুধু ওই বছরই নয়, পরের বছরেও ঢাকা লিগে প্রাইমের হয়ে খেলেন ইংলিশ ক্রিকেটার। একবার আবাহনী লিমিটেডেও খেলতে এসেছিলেন এ ব্যাটসম্যান।

২০১৬ থেকে বিপিএলেও খেলেছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, কুমিল্লা ওয়ারির্স, খুলনা টাইটান্স ও বরিশাল বুলসে খেলেছেন। যেখানে ২৮ ম্যাচে তার রান ৮৬৯। রয়েছে ১টি সেঞ্চুরি, ৫টি ফিফটি। ব্যাটিংয়ে আজ আগ্রাসী মনোভাব থাকলেও তেমন জোরাজুরি ছিল না। স্রেফ টাইমিং তার ভরসা। সহজাত ব্যাট স্পিড। এছাড়া পেশির সর্বোত্তম ব্যবহার। গ্যাপ খুঁজে, জায়গা বানিয়ে, বলের মেরিট অনুযায়ী ব্যাটিং। মালানের ব্যাটিং বর্নণা করতে এতোটুকুই যথেষ্ট।

 

বাংলাদেশের বোলারদের প্রায় নিয়মিত খেলায় কাজটা সহজ হয়েছে বলে মনে করছেন মালান, ‘হ্যাঁ, আমি কয়েকবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে খেলার সৌভাগ্য পেয়েছি। এই ছেলেদের বিরুদ্ধে বেশ অনেক এবং বিভিন্ন কন্ডিশনে খেলতে পেরেছি। চট্টগ্রামে ভালো উইকেটে ব্যাটিং করেছি। পাশাপাশি ঢাকার উইকেট তো আছে। তাতে হয়েছে কি, আপনি একই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে খেলার বিভিন্ন উপায় শিখেছেন। বলতে দ্বিধা নেই, এই বছরের শুরুতে তাদের বিপক্ষে পাওয়া সেঞ্চুরিটি আমার করা সবচেয়ে কঠিন এবং বিরুদ্ধ কন্ডিশনে পাওয়া সেরা সেঞ্চুরি। আমি বিশ্বাস করি আপনি যত প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে খেলবেন, তারা আপনার সম্পর্কে তত শিখবে, তাদের বিপক্ষেও আপনি ভালো করার চেষ্টা চালিয়ে যাবেন।’

২৯ বছর বয়সে মালানের ইংল্যান্ডের হয়ে ওয়ানডে অভিষেক। সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার হিসেবে তার পথচলা শুরু হয়েছিল। ওয়ানডেতে অভিষেকের আগে ঘরোয়া ক্রিকেটে ৫০০ এর বেশি ম্যাচ খেলেছেন। যেখানে ছিল ১৭১ লিস্ট এ ম্যাচও। তার ওপর যে ভরসা রেখেছিল তা পুষিয়ে দিচ্ছে হাড়েহাড়ে। ২৩ ওয়ানডে ইনিংসে এরই মধ্যে ৬ সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন যেখানে তার গড় ৬৩.১৫। যা ওয়ানডে ক্রিকেটের ৫২ বছরের ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ। সামনে তার সুখবর তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

Leave A Reply

Your email address will not be published.