বরিশালে “হাইড্রোলিক হর্ন নিয়ন্ত্রণে করণীয়” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২৫ মে) বরিশাল নগরীর বান্দ রোডস্থ গ্রান্ড পার্ক সাউথগেইট কনফারেন্স হলে আয়োজিত হল “হাইড্রোলিক হর্ন নিয়ন্ত্রণে করণীয়” শীর্ষক আলোচনা সভা।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এবং জাতীয় পার্টির সমন্বয়ে গঠিত মাল্টিপার্টি অ্যাডভোকেসি ফোরাম (এমএএফ) এবং ইউএসএআইডি ও এসপিএল প্রকল্পের আওতায় ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল-এর সহায়তায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বরিশাল নগরীতে হাইড্রোলিক হর্নের ব্যবহার অত্যাধিক মাত্রায় বেড়ে যাওয়ায় তা জনজীবনের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। হাইড্রোলিক হর্নজনিত শব্দদূষণের কারণে সাধারন মানুষের শ্রবণশক্তি হ্রাস, শিশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকির পাশাপাশি মানসপটে বিরূপ প্রভাব ফেলা, এমনকি দুর্বল হার্টের মানুষের জন্য মৃত্যুঝুঁকিও বয়ে আনছে৷ এমতাবস্থায়, নাগরিকদের প্রত্যাশাকে বিবেচনায় নিয়ে এমএএফ হাইড্রোলিক হর্ন নিয়ন্ত্রণ ও সচেতনতা তৈরির জন্য এই সভার আয়োজন করে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ, সাংবাদিক, যুব প্রতিনিধিরা, বিআরটিএ-এর প্রতিনিধি, পুলিশ প্রতিনিধি, দোকাল মালিক সমিতির প্রতিনিধিসহ আরো অনেকে। বক্তব্য রাখেন ব্রজমোহন কলেজ-এর সাবেক অধ্যক্ষ ও শিক্ষাবিদ স. ম. ইমানুল হাকিম; বিদ্যুৎ চন্দ্র দে, পুলিশ পরিদর্শক, টিআই প্রশাসন, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ; দেবাশীষ বিশ্বাস, সহকারী পরিচালক, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কতৃপক্ষ (বিআরটিএ); ব্রজমোহন কলেজ সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবির; জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক এডভোকেট একেএম মর্তুজা আবেদীন, বরিশাল সিটি কর্পোরেশন-এর প্যানেল মেয়র ও মহানগর মহিলা লীগ-এর সাধারন সম্পাদক কোহিনুর বেগম; জেলা (দক্ষিণ) জাতীয়তাবাদী দল-এর সদস্য সচিব এডভোকেট আবুল কালাম শাহীন; সংস্কৃতিকর্মী সাইফুর রহমান মিরণ; ভাটারখাল দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আবদুর রহিম সহ আরো অনেকে। আয়োজনটি সঞ্চালনা করেন ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল-এর ডেপুটি ডিরেক্টর দিপু হাফিজুর রহমান৷
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন এমএএফ-এর সদস্য সচিব এডভোকেট মাহমুদ হোসাইন আল-মামুন এবং সভায় সভাপতিত্ব করেন এমএএফ-এর আহ্বায়ক মো. মোয়াজ্জেম হোসেন তালুকদার চুন্নু। সভার শুরুতে, হাইড্রোলিক হর্ন-এর ক্ষতিকর প্রভাব, হাইড্রোলিক হর্ন বন্ধে আইন ও জরিমানা এবং হাইড্রোলিক হর্ন বন্ধে করণীয় নিয়ে একটি প্রবন্ধ পাঠ করেন ৩ রাজনৈতিক দলের ৩ যুব নেতৃবৃন্দ।
এরা ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল-এর বর্তমান ইয়াং লিডার ফেলোস। প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়, “স্বাস্থ্য ও শ্রবণের জন্য ক্ষতিকর বলে উচ্চ আদালতে করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ২৩ আগস্ট রাজধানীতে হাইড্রোলিক হর্নের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেন আদালত। এরই ধারাবাহিকতায় ওইবছরের ৫ নভেম্বর সারাদেশে যানবাহনে হাইড্রোলিক হর্ন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।” প্রবন্ধে আরো বলা হয়, “১৯৮৩ সালের ‘মোটরযান আইন’ অনুযায়ী ১৩৯ ধারায় নিষিদ্ধ হর্ন বা হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহারে ১০০ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে৷ শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা ২০০৬ এ শব্দদূষণের অপরাধে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে।” প্রবন্ধ পাঠের পর অংশগ্রহণকারীরা যার যার অবস্থান থেকে হাইড্রোলিক হর্ন বন্ধে সুপারিশ তুলে ধরেন।
সকলের সুপারিশে উঠে আসে হাইড্রোলিক হর্ন বন্ধে যে সকল আইন আছে তা সাধারন নাগরিকদের কাছে প্রচার ও সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন, আইনের কঠোর প্রয়োগ, হাইড্রোলিক হর্নের আমদানি ও বিক্রি সমূলে বন্ধে উদ্যোগ, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, মালিক সমিতির মাধ্যমে চালকদের সচেতন করা, মোড়ে মোড়ে পুলিশ টহল ও সতর্কিকরণ বিলবোর্ড ইত্যাদি। উলেখ্য যে, মাল্টিপার্টি অ্যাডভোকেসি ফোরাম (এমএএফ) বরিশাল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এবং জাতীয় পার্টির নেতাদের সমন্বয়ে গঠিত একটি ফোরাম যাদের মূল উদ্দেশ্য নাগরিক প্রত্যাশা পূরণে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সাথে এডভোকেসি করা৷