বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন একাধিক সংবাদকর্মী। তাদের মধ্যে গুরুত্বর অবস্থায় বেশ কয়েকজন বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বুধবার রাতে সদর উপজেলার জাগুয়া ইউনিয়নে সংবাদকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।
বৃহস্পতিবার (২ মে) এ ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানায় সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। মামলার বাদি মো. বেলাল হোসেন। তিনি বরিশাল নগরের চাঁদমারী এলাকার বাসিন্দা ও স্থানীয় একটি দৈনিকের সাংবাদিক।
মামলায় জাগুয়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য জামাল সর্দার, বর্তমান ইউপি সদস্য সুজন হাওলাদার, তাদের অনুসারী শাহকামাল, আসাদুল, কবির হাওলাদার, মিরাজ ফকির, জালাল ফকির, রমিজ হাওলাদার, সুমন হাওলাদার, সাইদুল সিকদার, লিটন মল্লিকসহ ১২ জনের নামে ও অজ্ঞাত অন্তত ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে সদর উপজেলার জাগুয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) সুজন হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সুজন জাগুয়া ইউনিয়নের পাঁচগাও চন্ডিপুর এলাকার আ. শুককুর আলী হাওলাদারের ছেলে।
মামলার এজাহারে বাদি উল্লেখ করেছেন, বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাচনের প্রচারণা চলাকালীন আনারস ও মোটরসাইকেল প্রতীকের কর্মী-সমর্থকদের মারামারির ঘটনা ঘটে। এ সময় সংবাদ পেয়ে বুধবার রাত পৌনে ৯ টার দিকে চন্ডিপুর মোহাম্মদ আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে যান বাদিসহ অন্য সাংবাদিকরা।
তারা (সাংবাদিকরা) সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, মারামারির ঘটনায় সেলিম খান নামে একজন আহত হয়েছেন। সংবাদের জন্য ঘটনার বিস্তারিত জানতে তথ্য সংগ্রহকালে এজাহারনামীয় ১২ জন আসামিসহ অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জন তাদের (সাংবাদিকদের) ওপর হামলা চালায়। এ সময় রাম-দা, দা, লোহার পাইপ, রড, লাঠি দিয়ে সাংবাদিকদের ওপর এলোপাতাড়ি হামলা চালানো হয়। সাংবাদিকদের ক্যামেরা ভাংচুর, মোবাইলও লুট করে নিয়ে যায় হামলাকারীরা। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে ঘটনাস্থল থেকে মামলার বাদিসহ আহত সাংবাদিকদের উদ্ধার করে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
মো. বেলাল হোসেন জানিয়েছেন, বর্তমানে তিনিসহ জাতীয় দৈনিকের ফটো সাংবাদিক আ. রহমান ও স্থানীয় দৈনিকের রিপোর্টার এইচ এম সোহেল হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। তিনি ঘটনার তিন নম্বর সাক্ষীর মাধ্যমে থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন।
মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সকালে এজাহার নামীয় আসামি সুজনকে চন্ডিপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনার সাথে জড়িত বলে স্বীকার করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মো. রেজাউল ইসলাম জানান, সুজনকে দুপুরে দায়েরকৃত মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এটিএম আরচিুল হক বলেন, মামলার বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার কার্যক্রমও চলমান।