পাকিস্তানের কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। ওই চিঠিতে আইএমএফকে ইসলামাবাদের সঙ্গে আলোচনার আগে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাতীয় পরিষদের নির্বাচনের ফলাফল তদন্তের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ বা পিটিআইয়ের একজন শীর্ষ নেতা ও সিনেটর আলী জাফর। তিনি আদিয়ালা কারাগারে খানের সঙ্গে সাক্ষাতের পর টেলিভিশনে এ কথা জানান।
আইএমএফের মুখপাত্র জুলি কোজ্যাক বলেছেন, পাকিস্তানের নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত হওয়ার একদিন পর চিঠিটি আসে। তবে ওয়াশিংটনভিত্তিক এ সংস্থাকে চিঠি লেখার জন্য খানের পদক্ষেপের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।
খান এ চিঠির বিষয়ে তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছ থেকে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছেন। তারা দাবি করেছেন, দেশের অর্থনীতির ক্ষতি করার জন্য ইমরান খান আইএমএফের ঋণ আটকানোর চেষ্টা করছেন।
পাকিস্তান গত গ্রীষ্মে বিদেশি অর্থপ্রদানের ক্ষেত্রে একটি ডিফল্ট এড়ানোয় আইএমএফ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের সঙ্গে মাসব্যাপী আলোচনার পর ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন করে।
২০২২ সালে সংসদে অনাস্থা ভোটে ইমরান খান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তার স্থলাভিষিক্ত হন শেহবাজ শরীফ।
গত ৮ ফেব্রুয়ারির ভোটে কোনো দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় শরীফ একটি জোট সরকার গঠনের জন্য তার মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা শুক্রবার জানান, শরীফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ বা পিএমএল-এন নারীদের জন্য সংরক্ষিত ৬০টির মধ্যে ২০টি আসন এবং সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত ১০টির মধ্যে চারটি আসন পাওয়ার পর বৃহত্তম দল হয়েছে। নয় স্বতন্ত্র সদস্যও শরীফের দলে যোগ দিয়েছেন।
দেশটির সংবাদমাধ্যম অনুসারে, এখন পিএমএল-এন সংসদে মোট ১০৮ জন আইন প্রণেতার সমর্থন উপভোগ করছে। এতে বলা হয়, শরীফের মিত্র পাকিস্তান পিপলস পার্টি বা পিপিপি নারী ও সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত ৭০টি আসনের মধ্যে ১৪টি আসন পেয়েছে এবং এখন পিপিপি জাতীয় পরিষদে ৬৮ সদস্যের সমর্থন পেয়েছে।
এদিকে ইমরানের চিঠিকে গুরুত্বহীন আখ্যা দিয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার। এ চিঠিতে যদি পাকিস্তানের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হয় তাহলে একে অপরাধ হিসেবে ধরা যেতে পারে বলেও তিনি দাবি করেন।
গত বছর পাকিস্তানের সঙ্গে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ চুক্তি করে আইএমএফ। মূলত বৈদেশিক ঋণের দায়মুক্তির জন্য এই ঋণ নেওয়া হচ্ছে। সামনের মাসে এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে, ফলে নতুন একটি ঋণ চুক্তির জন্য চেষ্টা করছে নতুন সরকার।
এদিকে নির্বাচনের রায় নিয়ে প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছে পিটিআই। শুক্রবার পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের নির্বাচনের ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিমকোর্টে পিটিশন জমা দিয়েছে দলটি।
সূত্র: এপি