এশিয়া কাপে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

 বিশাল জয়ে প্রথমবারের মতো যুব এশিয়া কাপের শিরোপা জিতলো বাংলাদেশ।  

 

২০২৩ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে আজ সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ১৯৬ রানের ব্যবধানে হারিয়ে বাংলাদেশের ছেলেরা। দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে ২৮৩ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। জবাবে ৮৭ রান তুলতেই সব উইকেট হারিয়ে ফেলে আমিরাতের যুবারা।

সবমিলিয়ে আসরের অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হলো টাইগার যুবারা। সেটিও রেকর্ড গড়ে। যুব এশিয়া কাপ ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে বড় জয়। আগেরটি ছিল আফগানিস্তানের, ২০১৭ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৮৬ রানে জিতেছিল তারা।

এবারের আগে মাত্র একবার অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। ২০১৯ আসরে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে ভারতের কাছে হেরে যায় যুব টাইগাররা। সবমিলিয়ে ১৯৮৯ সালে শুরু হওয়া যুব এশিয়া কাপে রেকর্ড আটবার শিরোপা জেতে ভারত। মাঝে ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন হয় আফগানিস্তান। অর্থাৎ বাংলাদেশের জয়ে যুব এশিয়া কাপ পেল নতুন চ্যাম্পিয়ন।

আজ লক্ষ্য তাড়ায় নেমে নড়বড়ে শুরু পায় আমিরাত। পঞ্চম ওভারে ওপেনার আরিয়ানশ শর্মাকে (৯) বিদায় করেন বাংলাদেশের পেসার মারুফ মৃধা। এরপর সপ্তম ওভারে ফের আঘাত হানেন মারুফ। এবার আরেক ওপেনার অক্ষত রাই (১১) বোল্ড করে ফেরেন ড্রেসিংরুমে। উইকেট পতনের মিছিল সেই থেকে শুরু। এরপর একে একে তানিশ সুরি (৬), এথান ডি’সুজা (৪) এবং আয়ান আফজাল খান (৫)-এর উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। পরের ৩টি উইকেটই নেন মিডিয়াম পেসার রোহানাত দৌল্লা বর্ষণ।

দলীয় ১২ রানের প্রথম উইকেট হারানো আমিরাত পাওয়ার প্লে’তে হারায় আরও ৩ উইকেট। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পর দ্বাদশ ওভারেই যোগ হয় আরও এক উইকেট। সেই ধাক্কা আর সামলে উঠতে পারেনি আমিরাত। উইকেট পতনের মিছিলে যুক্ত হয় বাকিরাও। চারে নেমে হারের ব্যবধান কমানো ২৫ রানের ইনিংস খেলেন ধ্রুব।

ফাইনালে উইকেট শিকারীর তালিকায় নাম লেখান বাংলাদেশের চার বোলার। এর মধ্যে মারুফ ও বর্ষণ ৩টি করে, ইকবাল হোসেন ইমন এবং পারভেজ রহমান জীবন পান২টি করে উইকেট।

এর আগে আশিকুর রহমান শিবলির দারুণ এক সেঞ্চুরিতে ভর করে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে আজ সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ২৮৩ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দিয়েছে বাংলাদেশের ছেলেরা। দুবাইয়ে আজ টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে অবশ্য ভালো শুরু পায়নি বাংলাদেশ। ওপেনার জিশান ইসলাম (৭) বিদায় নেন দ্রুতই। কিন্তু এরপর ১২৫ রানের জুটি গড়ে মোড় বদলে দেন শিবলি এবং চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ান।

রিজওয়ান ৭১ বলে ৬০ রান করে বিদায় নিলেও চাপে পড়েনি বাংলাদেশ। কারণ এরপর ফের আরিফুল ইসলামকে নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি জুটি গড়েন শিবলি। এর মাঝেই আসরে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরির দেখা পান তিনি। এই ম্যাচের আগের চার ম্যাচে ২টি ফিফটি ও একটি সেঞ্চুরি ছিল তার। আসরে একমাত্র ব্যাটার হিসেবে ৩৫০-এর বেশি রানও করেছেন শিবলি।

শিবলি ধরে খেললেও অন্যপ্রান্তে আরিফুল হক রানের চাকা সচল রাখতে দারুণ ভূমিকা রাখেন। ব্যাট হাতে দৃষ্টিনন্দন কিছু শট খেলে তিনি তুলে নেন ফিফটিও।  ব্যক্তিগত ফিফটির পর অবশ্য টিকতে পারেননি আরিফুল। ৪০ বলে ৬ চারে সাজানো এই ইনিংসটি শেষ ১০ ওভারে বাংলাদেশের রানরেট ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কিন্তু তার বিদায়ের পর দ্রুত আরেকটি উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

৫ বলে ৫ রান করে ড্রেসিংরুমের পথ ধরেন আহরার আমিন। মোহাম্মদ শিহাব জেমসও (৩) পারেননি দাঁড়াতে।  তবে অপরপ্রান্তে অটল থাকেন শিবলি। যদিও স্ট্রাইকরেট তুলনামূলক কম ছিল তার, তবে শেষদিকে অধিনায়ক মাহফুজুর রহমান রাব্বি মাত্র ১১ বলে ২ ছক্কা ১ চারে ২১ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে রানের গতি ঠিক রাখেন।

শেষ ওভারে অবশ্য বেশি রান তুলতে পারেনি বাংলাদেশ। উইকেটও হারিয়েছে ৩টি। আমিরাতের পেসার আয়মান আহামেদের করা ওভারের দ্বিতীয় বলেই লং অনে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন লোয়ার অর্ডার ব্যাটার রাব্বি। পঞ্চম বলে একই পথ ধরেন শিবলি। ১৪৯ বলে ১২৯ রানের ইনিংসটি খেলার পথে ১২টি চার ও ১ ছক্কা হাঁকান এই ওপেনার। ওভারের শেষ বলে অষ্টম উইকেট হিসেবে বিদায় নেন রোহানাত দৌল্লা বর্ষণ। ৮ উইকেটে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৮২ রান।

বল হাতে আমিরাতের আয়মান তুলে নিয়েছেন ৪ উইকেট। এছাড়া ওমিদ রহমান ২টি এবং হার্দিক পাই ও ধ্রুব পারাশার ১টি করে উইকেট নেন।

Comments (০)
Add Comment