প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতেই হবে। এই পরিস্থিতি কোনোভাবেই কম্প্রমাইজ করা যাবে না।
শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে বরিশাল নগরের শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে এসব কথা বলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
মাদারীপুরের কালকিনিতে নির্বাচন কেন্দ্রিক সহিংসতার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সিইসি বলেন, দুই দিন আগে ফরিদপুরের একটি ঘটনা শুনে সঙ্গে সঙ্গে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে তথ্য নিয়েছি এবং ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে তথ্য নিয়ে আমরা চট করে কোনো শাস্তি দিতে পারি না। আমরা আজকের তথ্যও সংগ্রহ করে ব্যবস্থা নেব। তবে সেটি আমাদের নিয়মানুযায়ী তদন্ত করে নেব। আপনারা আশ্বস্ত থাকুন যে ঘটনা ঘটছে, তা আমরা পর্যবেক্ষণ করছি।
তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হবে, দুই-একটি ঘটনাকে খুব বেশি বড় করে দেখবেন না। কিন্তু অবশ্যই ঘটনাগুলোকে প্রতিহত করতে হবে, তা না হলে মানুষের মাঝে আস্থা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, পুলিশের কর্মকর্তাদের প্রিভেনটিভ ক্যাপাবিলিটি (প্রতিরোধ ক্ষমতা) বাড়ানোর চেষ্টা করতে বার বার বলেছি। ঘটনা ঘটে গেলে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছি, ট্রেনের বগিতে আগুন লাগুক তারপর গ্রেপ্তার করেছি, এটা নয়। আমি চাই না ট্রেনে আগুন লাগুক, কোনো সহিংসতা ঘটুক। আমি চাই না কারও মৃত্যু ঘটুক। তারাও (পুলিশ প্রশাসন) এ বিষয়ে সতর্ক রয়েছে এবং চেষ্টা করে যাচ্ছে।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে হাবিবুল আউয়াল বলেন বলেন, নির্বাচন শুধু ফেয়ার হলেই হবে না, জনগণকেও দেখতে হবে এবং দেখে বিশ্বাস করতে হবে যে, নির্বাচন ফেয়ার হয়েছে। আর এটাই হচ্ছে আপনাদের ক্যামেরা। আপনাদের মাধ্যমে কীভাবে সমগ্র নির্বাচনটা উঠে আসে, জনগণের কাছে কীভাবে উপস্থাপিত হয়, তার মধ্য দিয়ে এটি পার্সেপসন রেট হবে। আমি বলেছি, ভেতরে কোনো অনিয়ম হলে ছবি তুলে ফেলবেন, জানিয়ে দেবেন। ভালো হোক খারাপ হোক বস্তুনিষ্ঠ তথ্য জনগণকে দেওয়া আপনাদের নৈতিক দায়িত্ব। অসত্য বা মিথ্যা তথ্য নয়। সবাই মিলে আমরা আমাদের নাগরিক দায়িত্ব পালন করব, সবার সমন্বিত প্রয়াসে নির্বাচনটা সুষ্ঠু হবে—এই বিশ্বাসটুকু রাখুন, আশাবাদটা রাখুন।
প্রার্থীদের বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, প্রার্থীদের আমি বলেছি, তারা যেন অবশ্যই সব জায়গাতে পোলিং এজেন্ট দেন। এটা বিশ্বের সব জায়গাতে অনুসৃত পদ্ধতি। তারাই একটি ভারসাম্য সৃষ্টি করবেন। কোনো অনিয়ম হচ্ছে কি না, কিংবা কোনো শক্তিশালী পক্ষ অর্থ বা পেশি শক্তি ব্যয় করে কোনো অনিয়ম করছে কি না, সেটা প্রতিহত করতে হবে প্রথমে পোলিং এজেন্টকে। পোলিং এজেন্টকে উঠে দাঁড়িয়ে প্রিজাইডিং অফিসারের কাছে কমপ্লেইন করতে হবে। আর প্রার্থীদের পোলিং এজেন্ট না থাকলে নির্বাচনে ভারসাম্য সৃষ্টি না হলে গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে পরেও প্রশ্ন দেখা দিতে পারে। এই অনুরোধটা প্রার্থীরা অনুধাবন করেছেন বলেই আশা করি।
তিনি বলেন, ভোটাররা যদি নির্বিঘ্নে কেন্দ্রে এসে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে আর প্রার্থীদের পোলিং এজেন্টরা যদি ভারসাম্য রক্ষার দায়িত্বটা পালন করেন তাহলে ভোট নির্বিঘ্ন হবে।