ঢাবিতে ত্রয়োদশ সঞ্জীব উৎসব

সংগীত ও সাংবাদিকতায় অসামান্য মুগ্ধতা ছড়ানো প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পী সঞ্জীব চৌধুরী তরুণদের মাঝে চিরঞ্জীব হয়ে আছেন তার সৃষ্টি নাগরিক জীবনের টানাপোড়েন, ভালোবাসা, প্রতিবাদ, সুখ-দুঃখের গানের মাধ্যমে। তরুণ প্রজন্মের কাছে চির প্রাসঙ্গিক এই সংগীতশিল্পীর জন্মদিন উপলক্ষে প্রতিবছর আয়োজিত হয় সঞ্জীব উৎসব। 

বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সঞ্জীব চত্বরে আজব কারখানার আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো ত্রয়োদশ সঞ্জীব উৎসব।

আয়োজনটির তত্ত্বাবধানে ছিল সঞ্জীব উৎসব উদযাপন পর্ষদ ও সার্বিক সহযোগিতায় ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদ (ডিইউসিএস) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যান্ড সোসাইটি (ডিইউবিএস)।

এক যুগ পেরোনো এই উৎসবের অন্যতম আয়োজক সংগীতশিল্পী জয় শাহরিয়ার বলেন, সঞ্জীবদার গান ও গানের দর্শন নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে আমরা একযুগের বেশি সময় ধরে এই আয়োজন করে আসছি। কথাপ্রধান গানের মাধ্যমে বার্তা পৌঁছে দেওয়া ছিলো তার অন্যতম দর্শন। এ ছাড়াও বাংলা লোকগানকে নাগরিক জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ করতে ভূমিকা রেখেছেন তিনি তার গানের মধ্য দিয়ে।

বিকেল হতে শুরু হয়ে নাগরিক এই উৎসব চলে রাত পর্যন্ত। বরাবরের মত সন্ধ্যায় আলোক প্রজ্জ্বলনও ছিলো এবারের আয়োজনের অংশবিশেষ। সঞ্জীব প্রেমীদের এই মিলন মেলায় এবার গান শুনিয়েছেন জয় শাহরিয়ার, সন্ধি, সাহস মোস্তাফিজ, অর্ঘ্য, নাহিদ হাসান, তুহিন কান্তি দাস, সাদী শাহনেওয়াজ, লিসান অ্যান্ড দ্য ব্লাইন্ডমেল, ফারাহ্ দীবা তাসনীম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যান্ড সোসাইটি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদ।

উৎসবের অন্যতম অংশীদার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদের সভাপতি দেবজ্যোতি বিশ্বাস বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদের মূল লক্ষ্য শুদ্ধ বাংলা সংস্কৃতি চর্চা। আমাদের সংস্কৃতি যেমন লোকজ, তেমনি নাগরিক। সঞ্জীব চৌধুরী আমাদের মাঝে বেঁচে আছেন তার সৃষ্টি-নাগরিক জীবনের অনুভূতির শিল্পকর্মে। আমরা চেষ্টা করছি আমাদের যুগ পেরোনো এই আয়োজনের মাধ্যমে তাকে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি তার দর্শনকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে। যা আমাদের মূল লক্ষ্যকেও বাস্তবায়ন করে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যান্ড সোসাইটির সভাপতি ইনজামাম কবীর সাকলাইন বলেন, সেই যে কথাটি- ‘মানুষ বাঁচে তার কর্মের মধ্যে, বয়সের মধ্যে নয়’, সঞ্জীব চৌধুরীর জন্য এই কথাটি অনেক বেশি মানানসই। বাংলাদেশের ব্যান্ড মিউজিক প্রেমী তরুণসমাজের কণ্ঠে, হৃদয়ে আজও বেঁচে আছেন তিনি, দলছুটের দলনেতা হয়ে আজও বেঁচে আছেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যান্ড সোসাইটি বরাবরের মত এই আয়োজনে থাকতে পেরে আনন্দিত।

২০১০ সালে প্রথম এই উৎসব পালিত হয়ে আসছে। ১৯৬২ সালের ২৫ ডিসেম্বর হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার মাকালকান্দি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন সঞ্জীব চৌধুরী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী সঞ্জীব চৌধুরী ছিলেন সৃজনশীল লেখক, শিল্পী ও সাংবাদিক। দেশের প্রথম সারির গণমাধ্যমে কাজের পাশাপাশি চালিয়ে গেছেন সংগীত-সাহিত্য চর্চা।

Comments (০)
Add Comment