র্যাব মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন বলেছেন, এই প্রজন্মকে বাঁচাতে হলে শুধু বইখাতা দিয়ে স্কুলে পাঠালে হবে না। এই বাস্তবতা কিন্তু এখন আর নাই।
শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ২০২৩ সালে কাশিয়ানী উপজেলায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও বৃত্তিপ্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
মিয়ানমার প্রসঙ্গে র্যাব ডিজি বলেন, মিয়ানমার অনেক আগে থেকে আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের আমাদের দেশে ঢোকানো থেকে শুরু করে তারা পায়ে পা দিয়ে এ কাজ করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় মনোভাবের কারণে দেশ এটা থেকে রক্ষা পেয়েছে। এখন যুদ্ধে যাওয়া মানে দেশটা শেষ হয়ে যাওয়া। মিয়ানমারে এখন সামরিক সরকার রয়েছে। তাদের আরাকান আর্মির সঙ্গে যুদ্ধ চলছে। তাই ওরা আমাদের সঙ্গে ঝামেলা সৃষ্টি করে ফায়দা লুটতে চাচ্ছে।
মাদক প্রসঙ্গে র্যাব ডিজি বলেন, মাদক বর্তমানে আকাশ ও সমুদ্র পথে আসছে। মিয়ানমার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাদের দেশে অবৈধ পথে ইয়াবাসহ নানা ধরনের মাদক ঢুকাচ্ছে। আমরা জাল ফেলে রেখেছি। মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় গ্যাং স্টার তাকে আমাদের জালের ভেতর ফেলেছি। আমরা হয়ত কিছু করতে পারবো।
তিনি আরও বলেন, মাদক হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ব্যবসা। রাতারাতি ধনী হওয়ার ব্যবসা। এটা জনপ্রতিনিধিসহ সবাই জানে। বিভিন্ন বাহিনীর মধ্যে মাদকসেবী ও ব্যবসায়ী রয়েছে। কোনো একক বাহিনীর পক্ষে মাদক নির্মূল করা সম্ভব না। মাদক নির্মূল করতে হলে সবাই মিলে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
এসময় শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে র্যাব ডিজি বলেন, আপনাদের মডেল হতে হবে। কারণ পরিবারের পরেই আপনাদের স্থান। আপনাদেরই শিক্ষার্থীদের সঠিক শিক্ষা দিতে হবে। আপনাদের সুযোগ সুবিধা এখন একটু কম থাকলেও আগামীতে ঠিক হয়ে যাবে।
অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে ডিজি বলেন, ছেলে-মেয়েকে স্কুল-কলেজে পাঠিয়ে ঘরে বসে থাকলে হবে না। খবর রাখতে হবে মাদকের সহজলভ্যতা সন্তানটিকে শেষ করে দিচ্ছে কিনা।
দেশে অভিজ্ঞ লোকের অভাব রয়েছে উল্লেখ করে র্যাব ডিজি বলেন, বর্তমানে দেশে অভিজ্ঞ লোকের অভাব রয়েছে বলেই আমাদের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে। এখনকার প্রত্যেকটি ক্যাডারের মধ্যে পেশাদারিত্বের ঘাটতি রয়েছে। যেমন লেখাপড়ায় ঘাটতি রয়েছে, পেশাদারিত্বে ঘাটতি রয়েছে, শৃঙ্খলায়ও ঘাটতি রয়েছে। এটাকে ওভারকাম করতে হলে এখন থেকে চেষ্টা করতে হবে। যাতে যুব সমাজ বা নতুন প্রজন্ম অবাধ্য হয়ে না যায়।
এমএ খালেক ডিগ্রি কলেজ মাঠে র্যাব-৬ এর অধিনায়ক লে.কর্নেল ফিরোজ কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা ও বৃত্তিপ্রদান অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে এম এ খালেক ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ কেএম মাহাবুব, ভাটিয়াপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক জাহিদুর রহমান, জেলা শিক্ষা অফিসার সেলিম তালুকদার, পুলিশ সুপার (অপারেশন) কাজী মাহাবুবুল আলম, ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম বক্তব্য দেন।
পরে প্রধান অতিথি কাশিয়ানী উপজেলার বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের ১০৯ জন কৃতি শিক্ষার্থীর হাতে ১০ হাজার টাকা করে বৃত্তি ও ক্রেস্ট তুলে দেন