নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আহসান হাবিব খান বলেছেন, ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে যদি কেউ বাধা দেয়, তার জন্য তাকে তিন থেকে সাত বছর কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক পদ, সংবিধান সুরক্ষা আমাদের দায়িত্ব। আর ভোটার উপস্থিত করানো প্রার্থীদের দায়িত্ব। তবে ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে যদি কেউ বাধা দেয় তার জন্য তিন থেকে সাত বছর কারাদণ্ডের আইন করা হয়েছে। আর সেভাবেই আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছি।
শনিবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এক মতবিনিমিয় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানান তিনি।
আহসান হাবিব খান বলেন, আমরা ভোটারদের আশ্বস্ত করতে চাই, তারা নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে এসে ভোট দিতে পারবেন। সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।
তিনি বলেন, ডিসি এসপিরা স্বাধীনভাবে কাজ করবেন। আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সবার কাছ থেকে শতভাগ সহায়তা পেয়ে সুন্দর নির্বাচন করতে চাই। একজন ভোটার ভোটকেন্দ্র পর্যন্ত আসছেন কিনা, বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন কিনা এবং ভোটটি সঠিকভাবে দিতে পারলেন কিনা এটা খেয়াল রাখতে হবে।
ইসি হাবিব বলেন, ভোটার ভোট দিয়ে সাংবাদিকদের কাছে যদি বলেন, ‘ভোট সুষ্ঠু হয়েছে’, এটাই আমাদের সার্থকতা। আর যদি বলেন, ‘কেন্দ্রে অরাজকতা চলছে, পেশীশক্তির প্রভাব চলছে’, তাহলে কিন্তু সবকিছুই জিরো।
তিনি বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য বিএনপির যে এজেন্ডা রয়েছে সেটি ভিন্ন ইস্যু। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কিছুই করার নেই। চাইলে রাজনৈতিক দলগুলো বসে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আসতে পারে। তারা যদি কোনো সমাধানে আসে সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
বিএনপির নির্বাচনে আসার বিষয়ে কমিশনার আহসান হাবিব বলেন, আমরাও চাই, দেশের জনগণও চায় নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ। কিন্তু ওনাদের (বিএনপি) এজেন্ডা একটু আলাদা। এই জিনিসটা সংবিধানের মধ্যে নেই, তা আমাদের কাজও না। এটা রাজনৈতিক দলের মধ্যে বসে যেটা সিদ্ধান্ত হবে সেটাকেই আমরা স্বাগত জানাব। তবে আমার আত্মাটা তৃপ্তি পাইত যদি নির্বাচনে সবাই আসত। বিএনপি নির্বাচনে আসতে চাইলে তফশিল পেছানোর ব্যাপারে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এসময় অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও সুন্দর পরিবেশে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন উপহার দেওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন এ নির্বাচন কমিশনার।
এর আগে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আজ দুপুরে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ঝালকাঠিসহ পার্শ্ববর্তী তিন জেলার নির্বাচন কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা, গোয়েন্দা ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিমিয় করেন তিনি।
সভায় ঝালকাঠি, পিরোজপুর ও বরগুনা জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও নির্বাচন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।