Take a fresh look at your lifestyle.

বান্দরবান থেকে ১০০ বিজিপি সদস্যকে টেকনাফে

২৪১

মিয়ানমারে বর্তমানে সংঘাতময় পরিস্থিতিতে এ পর্যন্ত বান্দরবান সীমান্তে দেশটির বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) ও সেনাবাহিনীর ৩২৭ সদস্য পালিয়ে এসেছেন। এদের মধ্যে বিজিপির ১০০ সদস্যকে কক্সবাজরের টেকনাফে স্থানান্তর করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) গাড়িতে তাদের টেকনাফে নেয়া হচ্ছে।

এদিকে ৬ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাত থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত সীমান্তের কাছাকাছি এলাকায় গোলাগুলির শব্দ কমেছে। বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকটি শব্দ শোনা গেলেও অনেকটা বন্ধ রয়েছে বিস্ফোরণের শব্দ। এ পর্যন্ত বিজিপি, সেনা সদস্যসহ মিয়ানমারের মোট ৩২৭ জন বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।

এদিকে বুধবার ঘুমধুম সীমান্ত পরিদর্শন করেছেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী।

এ সময় তিনি বলেন, সীমান্ত পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বিজিবির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে ধৈর্য ধারণ করে, মানবিক থেকে এবং আন্তর্জাতিক সুসম্পর্ক বজায় রেখে পরিস্থিতি মোকাবিলার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, অবৈধভাবে আর একজনকেও বাংলাদেশে ঢুকতে দেয়া হবে না।

বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেয়াদের বিষয়ে বিজিবি প্রধান বলেন, তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। এ ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মিয়ানমারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে যাচ্ছে। যারা আশ্রয় নিয়েছেন তাদের সঙ্গে আলাপ করেছি। তারাও দ্রুত ফেরত যেতে আগ্রহী।

কয়েকদিন ধরেই সীমান্তের ওপারে সংঘাতময় পরিস্থিতিতে ক্যাম্প ছেড়ে পালাচ্ছেন বিজিপির সদস্যরা। হাতে অত্যাধুনিক রাইফেল থাকা স্বত্বেও বিদ্রোহী গ্রুপ আরাকান আর্মির হাতে প্রাণ হারানোর ভয়ে ভীত তারা। অবশ্য বাংলাদেশ সীমান্তে আসার পর পরই তাদের নিরস্ত্র করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে বিজিবি।

এই বিজিপি সদস্যরাই ২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশের বান্দরবানের তমব্রু-কক্সবাজারের টেকনাফ এবং উখিয়া সীমান্তে অবস্থান নিয়ে বাংলাদেশের প্রতি নানা রকম উসকানি দিয়ে আসছিলেন। বাংলাদেশে চলে আসা রোহিঙ্গারা যাতে আর মিয়ানমারে ঢুকতে না পারে এজন্য সীমান্ত ঘেঁষে একাধিক ট্রেঞ্চও তৈরি করেছিলেন।

২০১৪ সালের ২৭ মে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি লেম্বুরছড়ি সীমান্ত থেকে টহলে থাকা বিজিবির নায়েক সুবেদার মিজানুর রহমান গুলি করে হত্যা করে বিজিপি সদস্যরা। হত্যার পর তারা মিয়ানমারের অভ্যন্তরে নিয়ে লুকিয়ে রাখে। পরবর্তীকালে বিজিবির হুঁশিয়ারির পরিপ্রেক্ষিতে পাঁচ দিন পর নায়েক সুবেদার মিজানের মরদেহ ফেরত দিতে বাধ্য হয়।

একইভাবে ২০১৫ সালে মিয়ানমারের বিজিপি সদস্যদের হাতে হিংস্রতার শিকার হয়েছিলেন বিজিবির নায়েক রাজ্জাক। ওই বছরের ১৭ জুন ভোরে নাফ নদীর বাংলাদেশ অংশে টহল দেয়ার সময় বিজিপি সদস্যরা নির্বিচারে গুলি করে। এসময় বিপ্লব নামে এক বিজিবি সদস্য গুলিবিদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি অপহরণ করে নিয়ে যায় নায়েক রাজ্জাককে। দুই দেশের পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ৯ দিন পর রাজ্জাককে ২৫ জুন সন্ধ্যায় দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। আসামির মতো বন্দি করে ছবি তোলার পাশাপাশি এক বিজিপি সদস্য কামড়ে তার নাক ছিঁড়ে নিয়েছিলেন।

শুধু মিয়ানমার সীমান্ত নয়, ভারতীয় সীমান্তেও বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী চরম ধৈর্য এবং মানবিকতার পরিচয় দিয়ে আসছে। ভারতীয় বিএসএফ সদস্যরা প্রায়ই বাংলাদেশ সীমান্তে চলে এলেও তাদের নিয়ম অনুযায়ী ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা নেয় বিজিবি। কিন্তু বিপরীতে বিএসএফ সদস্যরা নানা অজুহাতে সীমান্তবর্তী গ্রামবাসীর পাশাপাশি বিজিবি সদস্যদেরও হত্যা করেছে।

বান্দরবানের জলপাইতলী সীমান্তে সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টারশেলের আঘাতে বাংলাদেশি এক নারীসহ দুজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছে বিজিবি। বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা।

Leave A Reply

Your email address will not be published.