বরিশাল সদর ও বাকেরগঞ্জে (৫ ও ৬ নম্বর সংসদীয় আসন) দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রচারে বাধা ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পাশাপাশি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকেও জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগীরা হলেন বরিশাল-৬ আসনের আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থী মোহাম্মদ শামসুল আলম চুন্নু। তিনি ট্রাক প্রতীক নিয়ে নির্বাচনের মাঠে নেমেছেন। অপর প্রার্থী মো. শাহবাজ মিঞা শোভন; তার প্রতীক ঈগল। বরিশাল-৫ আসনের ভুক্তভোগী প্রার্থীর না, সালাউদ্দিন রিপন (ট্রাক প্রতীক)।
মোহাম্মদ শামসুল আলম চুন্নু বলেন, আমাদের আসনে নৌকার প্রার্থী হাফিজ মল্লিক। তিনি আমাদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। সম্প্রতি তিনি বলেছেন, যারা নৌকায় ভোট দেবে না, তাদের এলাকা ছেড়ে আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি থেকে বেড়িয়ে আসতে। আমার প্রতীক ট্রাকের পক্ষে মাইকিং করতেও নিষেধ করা হচ্ছে। নৌকার প্রার্থী সাথে যারা মিছিলে যাচ্ছেন তারা আমাকে ও আমার সমর্থকদের উদ্দেশ্য করে অশালীন বক্তব্য-স্লোগান দিচ্ছে। আবার ২৯ ডিসেম্বরের পরে মাঠে নৌকার বাইরে আর কোনো প্রার্থী মাঠে থাকবে না বলে প্রচার করছেন।
তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সামনে রিটার্নিং কর্মকর্তার উপস্থিতিতে আমরা বিষয়গুলো তুলে ধরেছি। সিইসি তিনি লিখিত আকারে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দিতে বলেছেন, আমরা সেই অনুযায়ী কাজও করছি।
অপর প্রার্থী মো. শাহবাজ মিঞা শোভন অভিযোগ করেছেন, গত ২০ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় নৌকার সমর্থকরা আমার ও আমার কর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এরপর থেকে আমি ও আমাকে সমর্থনকারীরা নির্বাপত্তাহীনতায় ভুগছি। রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পাশাপাশি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে সমস্যার কথা তুলে ধরেছি। তারা কী ব্যবস্থা নেবেন, সেটি দেখার অপেক্ষায় আছি।
বরিশাল-৫ (সদর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাউদ্দিন রিপন বলেছেন, তার কর্মীদের মারধর-হুমকি ও নারী সমর্থকের দোকান বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমার প্রচারে বাধা, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা, কর্মীদের মারধর ও হুমকি দিচ্ছে সরকারি দলের প্রার্থীর সমর্থকরা। আমি নির্বাচন কর্মকর্তাদের বিষয়গুলো বলেছি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনের সচিবের কথায় আমি আশ্বস্ত। রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে নৌকার প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগগুলোর বিষয়ে লিখিত আকারে পেলে তদন্ত করে নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম।
এর আগে সকালে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রার্থীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভা শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, প্রার্থীদের অনেকেই এ পর্যন্ত অবস্থায় সন্তুষ্টি ব্যক্ত করেছেন। তারা ছোট খাট দুয়েকটি ঘটনার কথা বলেছেন। সেগুলো কঠোরভাবে দমন করার কথা আমি বলেছি। তবে নির্বাচনে কিছু কিছু উত্তাপ হতে পারে, সেখান থেকে যেন অগ্নিউৎপাত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্য বলা হয়েছে। আর প্রার্থীদের অনুরোধ করেছি তারা যেন আচরণ বিধি মেনে চলেন। তারা যদি পারস্পরিক আস্থা সৃষ্টি করতে না পারেন, তাহলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে এককভাবে নির্বাচন করাটা কঠিন হয়ে যায়। আর তাদের সহযোগিতা পেলে এটা সহজ হয়ে যায়।